পাঠকের স্বাভাবিক অনুভূতিতে আলােড়ন সৃষ্টিকারী ঔপন্যাসিক ইমদাদুল হক মিলন। তিনি সমকালীন ঘটনা নিয়ে উপন্যাস রচনায় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তার নূরজাহান' (১৯৯৫) উপন্যাসটি এ প্রসঙ্গে উল্লেখযােগ্য।
দুই খণ্ডে সমাপ্ত এ উপন্যাস মৌলভীবাজার জেলার ছাতকছড়া গ্রামের একটি সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা। বিয়ের পর নূরজাহানের স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। গাঁয়ের মসজিদের ইমাম তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু নূরজাহানের বাবা আধবয়সী মাওলানার সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হয় নি। গাঁয়েরই মােতালেব নামে এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়া হয়। এতে ইমাম ফতােয়া জারি করেন যে নূরজাহানের দ্বিতীয় বিয়ে বৈধ হয় নি। তাই ফতােয়ার বলে নূরজাহান ও তার স্বামীকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর মারা হয় এবং তার বাবাকে করা হয় বেত্রাঘাত। এই অপমানে নূরজাহান আত্মহত্যা করে।
ইমদাদুল হক মিলন নূরজাহানের এই করুণ কাহিনি নিয়ে নূরজাহান’ উপন্যাসে বাংলাদেশের নির্যাতিত নারীর বেদনাদায়ক আলেখ্য অঙ্কন করেছেন। তার লেখায় উন্মোচিত হয়েছে স্বার্থান্বেষী ফতােয়াবাজ মৌলবীদের মুখােশ। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতি ও গ্রামীণ মানুষের জীবনচিত্র রূপলাভ করেছে। নূরজাহান হয়ে উঠেছে এক প্রতিবাদী চরিত্র।
লেখক অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গাঁয়ের জীবন ও পরিবেশের বাস্তবভিত্তিক চিত্র অঙ্কন করেছেন।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup