ড. রাজিয়া খানের বটতলার উপন্যাস' (১৯৫৯) তার প্রথম উপন্যাস হিসেবে স্বাতন্ত্রের পরিচয়বাহী। তার উপন্যাসে আধুনিক নিঃসঙ্গতা, শূন্যতাবােধ, প্রেম ও সংস্কারের দ্বন্দ্ব রূপায়িত হয়েছে। শহরের মধ্যবিত্ত জীবনের চিত্র তার উপন্যাসের উপজীব্য। এ উপন্যাসের নায়ক মঈন। দেশবিভাগ তার জীবনকে সবদিক থেকে বিপর্যস্ত করে ফেলে। সে কলকাতা ছেড়ে আসে ঢাকায়, ঢাকা ছেড়ে যায় করাচি। আর সেখানেই তার সাংবাদিক জীবনের দ্বন্দ্বময় প্রকাশ ঘটে।
কলকাতার মেয়ে সুমিতার সঙ্গে ছিল তার প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু সে বিয়ে করে করাচির হেনরিয়েটাকে। শুরু হয় জীবনে দ্বন্দ্ব সংঘাত। হেনরিয়েটার সঙ্গে তার সম্পর্ক যান্ত্রিক, তার মনের মধ্যে আছে প্রেমপ্রতিমা হিসেবে সুমিতা।
মঈন সুমিতার প্রেমের ব্যর্থতা অন্যদিকে দাম্পত্য জীবনের অসঙ্গতি মঈনের জীবনকে সমস্যায় ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে। পরিণতিতে সুমিতা হয়ে যায় অপ্রকৃতিস্থ। এভাবে আধুনিক মানুষের যন্ত্রণা, বেদনা, নৈঃসঙ্গ্য ও বিকারের এক জগৎ এখানে নির্মিত হয়েছে।
ব্যক্তি ও সমাজের ক্রমবর্ধমান ট্র্যাজেডি দর্শক ও ব্যাখ্যাকার মঈন পরিণামে মীমাংসাহীন শূন্যতার মধ্যে নিপতিত হয়। এই উপন্যাসের মূল বিষয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক ট্র্যাজেডি। কিন্তু তার সঙ্গে সমাজ, সময় ও দেশের জটিল এবং দ্বন্দ্বময় ঘাত প্রতিঘাত যুক্ত হয়েছে। বটতলার উপন্যাসে মঈনের আত্মকথন ও স্মৃতি অনুষঙ্গে উপমহাদেশের সুবৃহৎ ভৌগােলিক পরিসর অনুরণিত।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup