আধুনিক বাংলা ভাষার গদ্যের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি বিদ্যাসাগর নামেই পরিচিত। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাঙালির মানস গঠনে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে এবং মূল্যবােধ সৃষ্টিতে কালজয়ী ভূমিকা রেখে গেছেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কুশলী শিল্পী মহাকবি কালিদাসের ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম' নাটক অবলম্বনে তার বিখ্যাত শকুন্তলা (১৮৫৪) উপাখ্যান রচনা করেন।
শকুন্তলা বিদ্যাসাগরের মৌলিক রচনা না হলেও এর রচনাভঙ্গি তার নিজস্ব এবং তাতে লেখকের আধুনিক মনােভাব, পরিমিতিবােধ, সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি ও শৈল্পিক সচেতনার পরিচয় পাওয়া যায়।
হরিণ-শিকার করতে গিয়ে একদিন চন্দ্রবংশীয় রাজা দুষ্মন্ত কণ্ব মুনির তপােবনে উপস্থিত হয়। সেখানে শকুন্তলা, প্রিয়ংবদা, অনসূয়া নামের মুনির তিন রূপবতী পালিতা কন্যার মধ্যে শকুন্তলার সঙ্গে দুষ্মন্তের বিয়ে হয়।
দুষ্মন্ত, চিহ্ন হিসেবে রাজ-আংটি শকুন্তলাকে দিয়ে নিজ রাজ্যে চলে আসে। রাজকার্যে ব্যস্ত দুষ্মন্ত শকুন্তলার গর্ভে এক পুত্র সন্তান জন্ম নেয়; নাম ভরত। ভরতসহ শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তের প্রাসাদে এসে তাদের বিয়ের কথা বর্ণনা দিলেও রাজা তা মনে করতে পারেন না। পরে দৈববাণীতে দুষ্মন্ত সব অবগত হন এবং শকুন্তলা-ভরতকে যােগ্য স্থান দেয়।
ভরত বড় হলে তার হাতে রাজ-দায়িত্ব অর্পণ করে শেষ জীবন তিনি ধর্মকর্মে অতিবাহিত করেন। বাংলা সাহিত্যে শকুন্তলা গুরুত্বপূর্ণ এর চমকার কাহিনি বা আখ্যান বর্ণনার জন্য। বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রতিষ্ঠার প্রারম্ভিক পর্বে শকুন্তলার কাহিনি নির্মাণ ও ভাষা ব্যবহার শিল্প ও পরিমিতিবােধের পরিচয় বহন করে।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup