আধুনিক বাংলা কাব্যে মুসলিম নবজাগরণের অন্যতম স্বাপ্নিক কবি ফররুখ আহমদ (১৯১৮-১৯৭৪)। তার প্রথম ও উল্লেখযােগ্য কাব্যগ্রন্থ 'সাত সাগরের মাঝি' (১৯৪৪)।
এ কাব্যগ্রন্থে মােট ১৯টি কবিতা স্থান পেয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযােগ্য কবিতা হলাে : সাত সাগরের মাঝি, সিন্দবাদ, পাঞ্জেরি, লাশ বন্দরে সন্ধ্যা, বার দরিয়ায়, আউলাদ, নাবিক ও তুফান।
এ কাব্যের কবিতাগুলি ১৯৪৩-১৯৪৪ সালের মধ্যে রচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিরূপ সমাজের ছবি লাশ ও আউলাদ কবিতায় পাওয়া যাবে। তবে মূলত মুসলমানদের জাগরণের লক্ষ্যে তিনি এ গ্রন্থের কবিতাগুলাে লিখেছেন।
সেজন্যে কবি ত্যাগ করেছেন বঙ্গীয় শব্দ ও অনুষঙ্গ, গ্রহণ করেছেন আরব্য উপন্যাস, ইরান-আরবের সংস্কৃতি ও পুরাণকথা। বাংলা প্রচলিত শব্দ পরিত্যাগ করে এ কাব্যে কবি বহু অপ্রচলিত আরবি-পারসি শব্দ গ্রহণ করেছেন। অনুষঙ্গের ক্ষেত্রেও এসেছে সমুদ্র বারংবার, এসেছে ঈগল পাখি, নারঙ্গির বনের সবুজ পাতা ইত্যাদি।
সাত সাগরের মাঝি’ কাব্যগ্রন্থ পাঠ করলে এই ধারণা হয়, কবি জন্মেছেন বাংলায়, কিন্তু তার মন পড়ে আছে আরব-ইরানের মরুভূমিতে।
এ কাব্যগ্রন্থে কবি ইসলামের হারানাে ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে দুর্বল ও অলস মুসলমানদের জেগে ওঠার আহ্বান করেছেন। কবি ইসলামের কর্ণধারকে অতীত ঐতিহ্যের গান শুনিয়ে, তার ঘুম ভাঙিয়ে তাকে শক্ত হাতে সবৈব বিপদ মােকাবেলা করে, ইসলামের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন সাত সাগরের মাঝি’ কবিতায়। কবি তার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন এভাবে-
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup