কালজয়ী ঔপন্যাসিক শহীদুল্লা কায়সারের প্রথম উপন্যাস সারেং বৌ'। সারেং জীবনের নানা টানাপােড়েন, গ্রামীণ জীবনের নানা রূপ, সমুদ্রতীরবর্তী জনপদের জীবনযাপন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে উপন্যাসটিতে।
সারেং বৌ' (১৯৬২) উপন্যাসে বাংলাদেশের সমুদ্র-উপকূলবর্তী জনপদের বিশ্বস্ত চিত্র রয়েছে। কদম সারেং সৎ বলে সহকর্মীদের মতাে বাড়ি ও দালান করতে পারেনি। স্ত্রী নবিতুনকে নিয়ে আর্থিক কষ্টের মধ্যেও সুখে থাকে সে। প্রকৃতির বিরুদ্ধতায় সারেং যখন দীর্ঘদিন নিখোঁজ, যখন নবিতুন মেয়ে আক্কিকে নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ে সেই সময় যুবতী নবিতুনের উপর দারিদ্র ও লােলুপ সমাজপতিদের লােলুপতা নেমে আসে। দাম্পত্য আদর্শনিষ্ঠ বলে নবিতুন সবকিছু পরাজিত করতে পারে। তার উদাহরণ সারেং কদম যখন ফিরে আসে তখন সাগরের বুকে সে চরম মাত্রায় পিপাসিত। এ অবস্থায় ধর্মীয় বিধি লঙ্ঘন করে নবিতুন নিজের স্তন্যদুগ্ধ পান করিয়ে স্বামীকে বাঁচাতে সাহায্য করে।
এই উপন্যাসে সব সংস্কার তুচ্ছ করে মানুষকে জয়ী দেখানাে হয়েছে। সমাজে নবিতুনের মতাে অভাবী মানুষ রয়েছে। অস্তিত্ব রক্ষায় গুজাবুড়িকে লুন্দর শেখের লালসা পূরণের মাধ্যম হতে হয়।
এ উপন্যাসে গ্রামীণ সমাজের বাস্তব চিত্র এবং মানুষের পঙ্কিলতার রূপটি উঠে এসছে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠেছে নবিতুন। নবিতুনের ভূমিভিত্তিক শান্তিময় সংসারের স্বপ্ন চিরন্তন নারীর আকাঙ্ক্ষা রূপায়িত হয়েছে। সামাজিক প্রেক্ষাপটে রচিত এ উপন্যাসে ভূমি ও মানুষের আন্তঃসম্পর্কের যােগাযােগ রয়েছে।
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup