মূলভাব : মানুষে মানুষে কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়েই পৃথিবীতে স্বর্গের সুখ নেমে আসে। কিন্তু অপরের অনিষ্ট চিন্তা সমাজে নিয়ে আসে বিপর্যয়। অন্যকে বিপদগ্রস্ত করতে গিয়ে অধিকাংশ সময় মানুষ নিজেই বিপদগ্রস্ত হয়।
ভাব সম্প্রসারণ : মানুষ পৃথিবীতে একে অপরের সাথে মিলে মিশে থাকবে এটাই একান্তভাবে প্রত্যাশিত। পরস্পরের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন গড়ে ওঠে একে অপরের মধ্যে সদ্ভাব ও স¤প্রীতির মাধ্যমে। এর ফলে একজন আরেকজনের দুঃখে কাতর হয়। তাকে উদ্ধার করার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এভাবেই চলতে থাকে সামাজিক কাজকর্ম। কিন্তু সমাজের সকল মানুষের মনমানসিকতা তো একরকম নয়। ভালো মানুষের আড়ালে কিছু দুষ্ট লোকেরও বাস থাকে। পরের অনিষ্ট করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। পরের ভালো তাদের দুচোখের কাঁটা। কীভাবে অন্যের ক্ষতি করা যাবে সেই চিন্তায় তারা সর্বদা ব্যস্ত থাকে। তাদের সবসময় যোগাযোগ থাকে তাদের সমজাতীয় লোকের সাথে। এরা ক‚টবুদ্ধির হোতা হিসেবে সমাজে পরিচিত। কিন্তু তারা একথা বুঝতে পারে না যে তারা পরের অনিষ্ট করতে গিয়ে নিজেরই বেশি ক্ষতি করে। তারা কখনোই সমাজের ঊর্ধ্বে নয়। সমাজের কারো যদি তারা ক্ষতি করে তাহলে কিছুটা হলেও তার প্রভাব সমাজের ওপর পড়ে। আর সমাজের ওপর প্রভাব পড়া মানে তার ওপর প্রভাব পড়া। কিন্তু স্থূলবুদ্ধির কারণে তারা অনেক সময় এই ব্যাপারটি বুঝতে পারে না। অনেক সময় অন্যের সামান্য ক্ষতি করার জন্য নিজের দ্বিগুণ ক্ষতি স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করে না। পরিণতিতে তারা তাদের নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে আনে। উদাহরণস্বরূপÑ ঘসেটি বেগম ও মীরজাফর, নবাব সিরাজদ্দৌলাকে ধ্বংস করতে গিয়ে তারা ইতিহাসে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরিচিত। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে এ রকম অজস্র উদাহরণ চোখে পড়বে। তাই পরের অনিষ্ট চিন্তা না করে পরের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই জীবনের সার্থকতা।
মন্তব্য : যারা পরের অনিষ্টের কথা চিন্তা করে তারা শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারে না। নিজের ফাঁদে নিজেই আটকে পড়ে ধুঁকে ধুঁকে মরে। চক্রান্ত ষড়যন্ত্রকারীরা সাময়িকভাবে সফল হলেও প্রকৃত বিচারে তারা ইতিহাসে ঘৃণিত মানুষ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে।