মূলভাব :শিক্ষা এমন এক পরশ পাথর যার ছোঁয়ায় একটি জাতি পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। মেরুদণ্ডহীন মানুষ যেমন কল্পনা করা যায় না, তেমনি শিক্ষাহীন কোনো জাতিকেও গণনা করা হয় না।
ভাব সম্প্রসারণ : সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষার মাধ্যমে জাতি কুসংস্কার, জড়তা ও হীনতা থেকে মুক্ত হয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। এক্ষেত্রে আদর্শ শিক্ষাই জাতিকে দিকনির্দেশনা দিতে পারে। বর্তমান শিক্ষা-দীক্ষায় অগ্রগামী জাতিগুলোই বিশ্বকে পরিচালিত করছে। শিক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনা ছাড়া কোনো জাতি বড় হতে পারে না। শিক্ষাহীন জাতি মেরুদণ্ডহীন প্রাণীর মতো। মেরুদণ্ডহীন মানুষ জীবন্মৃতের মতো সংসারে জীবনযাপন করে, তার দ্বারা যেমন সমাজ ও দেশের কোনো উন্নতি আশা করা যায় না, তেমনি শিক্ষাহীন জাতিও পদে পদে পঙ্গু হয়ে পড়ে। তাই শিক্ষা একটি জাতির জীবনে মেরুদণ্ড। মেরুদণ্ডহীন মানুষ যেমন এ জগতে অপ্রয়োজনীয়, তেমনি শিক্ষাহীন জাতিও পৃথিবীতে পতিত। নিজেকে চেনার জন্য যেমন শিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি জাতীয় অগ্রগতি শিক্ষা ছাড়া অসম্ভব। শিক্ষা মানুষের মানবিক গুণাবলিকে বিকশিত করে এবং তার মাঝে সুকুমার প্রবৃত্তির স্ফ‚রণ ঘটায়। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ যে জ্ঞান অর্জন করে তা দিয়ে সে জীবনকে ঠিকমতো গড়ে নিতে পারে। উপযুক্ত শিক্ষাগ্রহণ না করলে মানুষ অন্ধকারেই নিমজ্জিত থাকে। প্রাকৃতিক নিয়মে মানুষ জন্মগ্রহণ করলেও মূলত শিক্ষার মাধ্যমেই সে নিজেকে আবিষ্কার করে। যারা নিজেকে নিজে আবিষ্কার করতে পারে না, তারা পেছনে পড়ে থাকে। এ পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিরাই জাতিকে এগিয়ে যেতে বাধা সৃষ্টি করে। অশিক্ষিত মানুষ মানেই হচ্ছে অসচেতন এবং অসম্পূর্ণ মানুষ। এ পর্যায়ে পশু ও তার মাঝে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। তাই শিক্ষাকে জাতীয় জীবনের মেরুদণ্ড বলা হয়ে থাকে, কারণ শিক্ষার প্রভাবেই মানুষ কুসংস্কার, জড়তা ও হীনতা মুক্ত হয়ে জাতিকে শক্তিশালী করতে পারে।
মন্তব্য : শিক্ষায় অগ্রসরতার মানদণ্ডে একটি জাতি চিহ্নিত হতে পারে। শিক্ষার মাধ্যমেই কোনো জাতি নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছতে পারে। একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে পরিচিতি লাভ করতে হলে শিক্ষার বিকল্প নেই।