রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলি’ শুধু তার নয়, বরং বাঙালির গর্ব অহংকার ও সাফল্যের নাম
গীতাঞ্জলি’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৭টি গানের সংকলন।
গানগুলি ১৯০৮ থেকে ১৯০৯ সালের বিভিন্ন
সময়ে শান্তিনিকেতন, কলকাতা, শিলাইদহ প্রভৃতি স্থানে বসে রচিত এবং ১৯১০ সালে গ্রন্থাকারে
প্রকাশিত।
গীতাঞ্জলি’ কাব্যে পাঁচটি ভাবধারার কবিতা লক্ষ্য করা যায়।
যেমন-
(ক) ভগবানকে
সহজে না পাবার জন্য হতাশ ভাবও প্রবল বিরহ বেদনার অনুভূতি,
(খ) অহংকার ত্যাগ করে দুঃখ
বেদনার দাহে হৃদয়কে নির্মল করে ভগবদুপলব্ধির উপযােগী করা ও তার দয়া প্রার্থনা,
(গ) প্রকৃতি ও
মানবের বিচিত্র রূপ রসে ভগবানের আভাস ও ক্ষণস্পর্শের অনুভূতি,
(ঘ) দীন দরিদ্রের মধ্যে, হীন
অস্পৃশ্যদের মধ্যে পতিত পাবন ভগবানের অবস্থান ও
(ঙ) অসীম সসীমের লীলাতত্ত্বের অনুভূতি।
রবীন্দ্রকাব্যে বারবার পালাবদল ঘটেছে। গীতাঞ্জলি’র পর্বে কবিচিত্তে ভগবদুপলব্ধির বিচিত্র অনুভূতি
লেখা করেছে। এ সময় কবির হৃদয় বৈষ্ণব ও সুফিরসে সিক্ত। ভাগবত প্রেম শ্রাবণের দুকূল প্লাবিত
স্রোতধারায় কবিচিত্তে প্রবাহিত। তাই এ সময় দীর্ঘ কবিতা ছেড়ে কবি আশ্রয় করেছেন অতি নিগুঢ়,
আধ্যাত্মিক অনুভূতি প্রকাশের বাহন হিসেবে গান।
গীতাঞ্জলি’, গীতালি, গীতিমাল্য প্রভৃতি কাব্যে
ভাগবত প্রেমেরই আত্যন্তিক প্রকাশ ঘটেছে। এ সব কাব্য থেকে কিছু কিছু গান নিয়ে মােট ৪০টি
কবিতাকে কবি ইংরেজিতে অনুবাদ করে '
The Song Offering (গীতাঞ্জলি) নাম দিয়ে নােবেল
প্রাইজ মাের্কে জমা দেন।
এই গীতাঞ্জলি’ই বাঙালি জাতীয় জীবনে নােবেল প্রাইজ এনে দেয়।
গীতাঞ্জলি’র এই গানগুলােতে ভগবানে মিলনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে, তাই বিরহ ব্যথাও
এখানে বিশেষ গভীরতা পেয়েছে। যেহেতু অহংকার মিলনে বাধা সৃষ্টি করে, তাই গর্ব দৰ্প অহংকার চূর্ণ
করে, দুঃখের সাধনা প্রেমগীতের মধ্য দিয়ে উচ্চারিত হয়েছে। গীতের মধ্য দিয়ে ভক্ত তার আরাধ্য
ভগবানকে অঞ্জলি প্রদান করায় এ কাব্যের নাম হয়েছে ‘গীতাঞ্জলি।
গীতাঞ্জলি: মডেল প্রশ্ন
Be Connected with us: Facebook Page Or Join to Our Facebook Goup